গতকাল ১১/০৪/২০২৫ তারিখ পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) এর কার্যালয় থেকে একটি জরুরী নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যেখানে কুয়েট প্রশাসন শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ দাবি বাস্তবায়ন করেছে বলে লেখা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর।আমাদের রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রথম দাবিটি নিয়ে কুয়েট প্রশাসন আমাদেরকে সম্পূর্ণভাবে আই ওয়াশ করার চেষ্টা করেছে। আমাদের দাবিটি ছিলো অধ্যাদেশের ('কুয়েট আইন ২০০৩' এ বিশ্ববিদ্যালয় আইনের) মাধ্যমে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। এই কুয়েট আইনে কর্মচারী এবং শিক্ষদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিলো কিন্তু ছাত্রদের ছিলো না। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপনের ভিত্তিতে Academic Ordinance এ ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়টি যুক্ত করা হলেও যেকোনো সময়ই সেটি বাতিল করা যেতে পারে এবং এর রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো আইনী ভিত্তি নেই। আমাদের দ্বিতীয় দফাটি ছিল মামলার ব্যাপারে। আমরা বারবার বলে আসছি অজ্ঞাতনামা মামলার সাথে অন্তত চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং কুয়েটের শিক্ষার্থী যারা হামলার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত তাদের নাম উল্লেখ করে মামলা দিতে যা আজ পর্যন্ত হয়নি। আর "প্রহসনমূলক তদন্ত কমিটি" বিনা শিক্ষার্থী প্রতিনিধিতে, বর্জনকৃত ভিসির আস্থাভাজন শিক্ষকদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে যারা শিক্ষার্থীদের অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করে যাচ্ছে, জোর করে স্টেটমেন্ট নিতে চাচ্ছে। প্রহসনমূলক তদন্ত কমিটি দ্বারা প্রকাশিত কোন রিপোর্ট কিংবা আদেশ এবং এই তদন্তের প্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট মিটিংয়ের কোনো সিদ্ধান্ত আমরা কুয়েটের পাঁচ ব্যাচের কোনো শিক্ষার্থীই, কখনোই মেনে নেব না। আমাদের তৃতীয় দাবিতে নিরাপত্তার ব্যাপারে বলা হয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার বদলে শিক্ষার্থীদের হলে আসা ঠেকাতে কুয়েট প্রশাসন পুলিশ মোতায়নের জন্য আবেদন করেছে। আবার কুয়েট প্রশাসন যদি প্রকৃতপক্ষে হামলার সময় পুলিশ প্রশাসন এর সাথে যোগাযোগ করে থাকে তাহলে সেই প্রমাণ অফিসিয়ালি প্রকাশ করে তাদের দায়িত্বের অবহেলার জন্য কেন শাস্তি চায় নাই, সেটাও একটি প্রশ্ন। এই সবকিছুর মাধ্যমে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে কুয়েট প্রশাসনের কতটুকু সদিচ্ছা আছে তা পরিষ্কারভাবেই প্রতিয়মান হয়।আমাদের চতুর্থ দাবিতে আহতদের সহায়তার কথা বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা প্রশাসনকে সাধুবাদ জানাই। আহতদের তালিকা এবং সহায়তা প্রাপ্তদের তালিকা দ্রুত প্রকাশ করলে আহতদের সংখ্যা নিয়ে যেকোন ধরণের চক্রান্ত প্রতিহত করা সম্ভব হবে।আমাদের পঞ্চম দাবীতে ১৮ ফেব্রুয়ারি এর হামলায় ছাত্রদল ও স্থানীয় বিএনপির সন্ত্রাসীদের শিক্ষার্থীদের উপর হামলার বিষয়ে বিবৃতি প্রদানের কথা বলা হয়েছিল। আমাদের রক্ত ঝরার প্রায় দুই মাস হতে চলল, সারা দেশের মানুষ জানে এমনকি বিএনপি পর্যন্ত এই ঘটনায় একজনকে যুবদল থেকে বহিষ্কার করে দোষ স্বীকার করলেও, কুয়েট প্রশাসনের পক্ষে সম্ভব হয়নি কুয়েট ছাত্রদল ও স্থানীয় বিএনপির সন্ত্রাসকে স্বীকার করা।আমাদের ষষ্ঠ দাবিতে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার ব্যর্থতার দায়গুলো স্বীকার করে পদত্যাগের কথা বলা হয়ে থাকলেও ব্যর্থতার দায়টুকু পর্যন্ত কেও স্বীকার করেনি, বরং একের পর জোরপূর্বক হল ভ্যাকান্ট, পানি ও ওয়াইফাই ইন্টারনেট লাইন বন্ধ, সকল গ্রাফিতি মুছে দেওয়া সহ আরো অনেক শিক্ষার্থী বিদ্বেষী কাজ করে যাচ্ছে। অতএব, আহতদের নিয়ে একটি মাত্র দাবি মানা হলেও বাকি কোনো দাবি কুয়েট প্রশাসন মানে নাই। সুতরাং অধিকাংশ দাবি মেনে নেওয়ার কথাটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। হলে থাকা শিক্ষার্থীদের অধিকার। হল ভ্যাকান্ট এর সিদ্ধান্তই একটি অন্যায্য স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত; যার বিপরীতে শিক্ষার্থীদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার চর্চার চেষ্টা করাকে ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের স্বৈরাচারী আইন অমান্য করা লাগছে, উস্কানিমূলক বক্তব্য লাগছে। এখানে তার উচিত ছিল ছাত্রদের ব্যথার জায়গাটি অনুধাবন করা; তা না করে তিনি প্রশাসনের পদলেহন করে যাচ্ছেন, সকল শিক্ষার্থীর সম্মিলিত সিদ্ধান্তকে কিছু শিক্ষার্থীর সিদ্ধান্ত বলে যাচ্ছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে গিয়ে কুয়েট ছাত্রদল এবং কিছু ফেক আইডি, পেজ এর ডিসইনফর্মেশনর সুরে সুর মিলিয়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের স্বার্থান্বেষী মহল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। ছাত্র কল্যাণ পরিচালক যেন কুয়েট প্রশাসনের পুতুলে পরিণত হয়েছে। আমরা আবারো স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিচ্ছি, আমাদের ক্যাম্পাস প্রত্যাবর্তন ঠেকাতে যত ষড়যন্ত্রই করা হোক না কেন, সকল প্রকার ষড়যন্ত্র, বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে ১৩ এপ্রিল, ২০২৫ আমরা আমাদের কুয়েট ক্যাম্পাসে আসছি।
সকল শিক্ষার্থীবৃন্দ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়